কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় সঠিক নিয়ম জানুন

কুরবানীর সঠিক নিয়ম অর্থাৎ কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় এ বিষয় সম্পর্কে আমাদের ইসলামের সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত।তাই আজকের আলোচনা থেকে আমরা কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় এবং কোরবানি কয় নামে দেওয়া যায় ও কোরবানির সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানবো।
কোরবানির -মাংস-কয়-ভাগে-ভাগ-করতে-হয়
সেই সাথে কোরবানি কি? কুরবানীর করার হুকুম কি?ও হযরত ইব্রাহিম আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোরবানির ইতিহাস এবং কার ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয় তা আজকের আলোচনা থেকে বিস্তারিত জেনে নিব।তাহলে চলুন কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় সে বিষয় সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যায়।
পোস্ট সূচিপত্রঃকোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয়। কোরবানির সঠিক নিয়ম

কুরবানি কী

আপনারা কি কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় সে সম্পর্কে জানেন কোরবানির বিধান যুগে যুগে সব শরীয়তে বিদ্যমান ছিল মানব সভ্যতায় সুর্দীঘ ইতিহাসে প্রমাণিত যে পৃথিবীর সব জাতীয় সম্প্রদায় কোন না কোন ভাবে আল্লাহর দরবারে তার প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করতেন উদ্দেশ্য একটাই আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্টি অর্জন।
আল্লাহ তাআলা বলেন,' আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কুরবানীর এক বিশেষ রীতি পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছি, যেন তারা ওই সব পশুর ওপর আল্লাহর নাম নিতে পারে যা আল্লাহ তাদেরকে দান করেছেন।' (সুরা হজ: আয়াত ৩৪)

কুরবানী কি আরবি করব বা কুরবান শব্দটি উর্দু ও ফার্সিতে কুরবানী নামে রূপান্তরিত এর অর্থ হল নৈকট্য বা সান্নিধ্য। কুরআনুল কারীমে কুরবানীর একাধিক সমার্থক শব্দের ব্যবহার দেখা যায়।আল্লাহ তাআলা বলেন, 'সুতরাং আপনি আপনার প্রতিপালকের জন্য নামাজ এবং কুরবানী আদায় করুন। এই কারণে কুরবানীর দিনকে ঈদুল আযহা বলা হয়। 

আল্লাহ বলেন আপনি বলুন, 'নিশ্চয় আমার নামাজ আমার কুরবানী আমার জীবন আমার মৃত্যু সবই বিশ্বজাহানে প্রতিপালক আল্লাহ তাআলার জন্য। '(সুরা আনআ'ম, আয়াত ১৬২)

আল্লাহ বলেন,' আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কুরবানীর বিধান রেখেছি। '(সূরা হজ্জ, আয়াত ৩৪)

কুরবানি করার হুকুম কি

কুরবানির হুকুম কি এই সম্পর্কে আপনারা অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন? তাই আজকে জানতে পারবেন কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় ও কুরবানি করার হুকুম কি।কুরবানি সুন্নতে মুয়াক্কাদা এটি অধিকাংশ আলেমের মত এবং ইমাম মালেক ও সাইফী রহ. এর প্রসিদ্ধ মত কিন্তু।

এ মতে প্রবক্তারা আরো বলেছেন সামর্থ্য থাকা অবস্থায় কুরবানী পরিত্যাগ করা মাত্র যদি কোন জনপদে লোকের সমর্থ্য থাকা শর্তেও সম্মিলিত কুরবানী পরিত্যাগ করে তবে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে কেননা কুরবানী হলো ইসলামের একটি শি'য়ার বা মহান নির্দেশন।

আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দিয়েছেন, 'তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করো এবং পশু কুরবানী করো। '(সূরা কাওসার আয়াত ২) আল্লাহ তাআলা নির্দেশ পালন করা ওয়াজিব।রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা শর্ত কুরবানীই করে না সে যেন আমার ঈদগাহের ধারে না আসে। "
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম আরো বলেন, 'হে মানব সকল প্রত্যেক পরিবারের দায়িত্ব হল প্রতি বছর কুরবানী দেওয়া। 'এছাড়াও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "তোমাদের মাঝে যে কুরবানী করতে চাই জিলহজ্ব মাসের চাঁদ দেখার পর সে যেন কুরবানী সম্পন্ন করার আগে তার কোন চুল ও নখ না কাটে। "
এই হাদিসের রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর যে কুরবানী করতে চায় কথা দ্বারা বুঝানো আসে এটা ওয়াজিব নয়।বিভিন্ন ধরনের হাদিস থেকে কুরবানীর হুকুম সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের মতবাদ করা হয়েছে।

ইব্রাহিম আঃ এর কোরবানির ইতিহাস

আজকে আমরা জানবো কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় এবং ইব্রাহিম (আ:) এর কোরবানির ইতিহাস সম্পর্কে। কুরবানী সম্পর্কে আল্লাহর নির্দেশনা কুরবানী হলো আল্লাহ তা'আলা সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম মাধ্যম কুরবানী শুরু হয়েছিল হযরত আদম আলাইহি সাল্লামেরহযরত আদম আলাইহি সাল্লামের দুই ছেলে হাবিল ও কাবিল এর মধ্যে সংঘটিত কোরবানির মাধ্যমে।

আল্লাহ তাআলা বলেন হে রাসূল আপনি তাদের আদমের পুত্রদের বৃত্তান্ত যথাযথভাবে পাঠ করে শুনান যখন তারা উভয়ই কুরবানী করেছিল তখন একজনের কুরবানী কবুল হলো এবং অন্যজনের কুরবানী কবুল হলো না।সে (কাবিল) বলল, আমি তোমাকে অবশ্যই হত্যা করব। অপরজন (হাবিল) বলল, অবশ্যই আল্লাহ মুক্তাকিদের কুরবানি কবুল করেন।

সে (হাবিল) বলল যদি তুমি আমাকে হত্যা করতে আমার দিকে হস্ত্র প্রসারিত করো। তবুও আমি তোমাকে হত্যা করতে তোমার প্রতি হস্ত্র প্রসারিত করবো না। কেননা আমি বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করি। '(সুরা মায়েদা, আয়াত ২৭/২৮)

এ হলো কুরবানী কবুল হওয়া ব্যক্তির ভাবাবেগ ও মানসিকতা কেননা কুরবানীর তাকওয়াবান লোকদের আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের অনন্য নিদর্শন। কুরবানী প্রচলন হযরত আদম আলাইহি সাল্লামের যুগ থেকে শুরু হলেও মুসলিম উম্মাহ কুরবানী মূলত হযরত ইব্রাহিম (আ:) আল্লাহর সন্তুষ্টির পরীক্ষা হযরত ইসমাইল আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কুরবানীর স্মৃতিময় ঘটনা নিজেদের মধ্যে বিরাজমান করা।

আল্লাহ তায়ালা হযরত ইব্রাহিম (আ:) কঠিন অগ্নিপরীক্ষায় ফেলেছিলেন এই কুরবানির নির্দেশন প্রদান করে যা তিনি হাসিমুখে পালন করে আল্লাহর প্রেমের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। আল্লাহ তাআলা বলেন যখন ইব্রাহিম (আ:) কে তার পালনকর্তা কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষা করলেন অতঃপর তিনি তা পূর্ণ করলেন তখন তিনি বললেন আমি তোমাকে মানবজাতির নেতা বানিয়ে দিলাম। '( সুরা বাকারা, আয়াত:১২৪)
কেন কুরবানীর প্রচলন হযরত ইসমাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হলেন তখন হযরত ইব্রাহিম (আ:) তার প্রাণপ্রিয় সন্তানকে আল্লাহর রাস্তায় কুরবানীর জন্য স্বপ্নে আদিষ্ট হন তখন নবীদের স্বপ্ন কোন কল্পনা প্রসূত ঘটনা নয় বরং তা ওহী বা আল্লাহর প্রত্যাদেশ। তখন হযরত ইব্রাহীম (আ:) পুত্র ইসমাইলকে বললেন, হে ছেলে! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে তোমাকে যবেই করছি এ বিষয়ে তোমার অভিমত কি)?
সে বলল, 'পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে আপনি তা পালন করুন আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের মধ্যে পাবেন।'( সূরা সাফাত, আয়াত :১০২)

৯৯ বছরের বৃদ্ধা হযরত ইব্রাহিম তার প্রাণপ্রিয় পুত্রকে আত্মনিবেদনে আল্লাহ তা'আলা যে পরীক্ষার সম্মুখীন করেছিলেন। আর তিনিও মিনা প্রান্তে প্রাণাধিক সন্তানকে কুরবানীর যে নির্দেশ পালন করেছিলেন। আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নে তার মানসিকতা আল্লাহর নিকট কবুল হয়ে গিয়েছিল যা আজও মুসলিম উম্মাহ প্রতিবছর জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখ এই তিন দিনের যে কোন একদিন পালন করে থাকেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহ কে লোক দেখানোর জন্য কোরবানি নয় বরং পশুকে জবাইয়ের মাধ্যমে আল্লাহ সন্তুষ্টি অর্জনে মনের পশু ও আমিত্বক জবাই করার তৌফিক দান করুক। কোরবানির মাধ্যমে নিজেকে তাকওয়াবান হিসেবে তৈরি করার তৌফিক দান করুন। আমীন।

কার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়

তার ওপর কুরবানী ওয়াজিব নয় এই সম্পর্কে বিভিন্ন রকমের মাসআলা রয়েছে আজকে আপনাদেরকে কয়েকটি মাসআলা সম্পর্কে জানাবো।
মাসআলা: কোরবানি সম্পূর্ণ হালাল সম্পদ থেকে করতে হবে হারাম টাকা দ্বারা কোরবানি করা সহি নয় এবং এই ক্ষেত্রে অন্য শরীকদের কোরবানি ও সহিহ হবে না। (আহসানুল ফাতাওয়া ৭/৫০৩)

মাসআলা: কোরবানির পশু চুরি হয়ে গেলে বা মরে গেলে ধনী ব্যক্তি আরেকটি পশু কোরবানি করতে হবে। গরিব যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয় হলে তার জন্য আরেকটি কোরবানি করা ওয়াজিব নয়। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৯)
মাসআলা: দরিদ্র ব্যক্তির যে নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নয় তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব নয় তবে সে কোরবানির নিয়তে পশু খরিদ করলে ওই পশুটি কোরবানি করা তার ওপর ওয়াজিব হয়ে যায়। ( বাদায়েউস সানায়ে ৫/৬২) 
মাসআলা: হাজী সাহেবানদের মধ্যে যারা কোরবানি দিনগুলোতে মুসাফির থাকবেন তাদের ওপর ঈদুল আযহার কোরবানি ওয়াজিব নয় কিন্তু যে হাজী কোরবানির কোনদিন মুকিম থাকবেন সামর্থ্যবান হলে তার ওপর ঈদুল আযহার কোরবানি করা ওয়াজিব হবে। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৩)
মাসআলা: একান্ন ভুক্ত পরিবারের মধ্যে একাধিক ব্যক্তির কাছে নেছাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে তাদের প্রত্যেকের ওপর ভিন্ন ভিন্ন কোরবানি ওয়াজিব হবে। (কিফায়াতুল মুফতী ৮/১৭)

কোরবানি কয় নামে দেওয়া যায়

আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রতিবছর সামর্থ্যবান মুসলিমেরা কোরবানি আদায় করে থাকেন। কোরবানির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো এতে অন্য সঠিক করা বা কয়েকজন মিলে কোরবানি করা গরু মহিষ ও উট এই তিন প্রকারের পশু একটিতে সর্বোচ্চ ৭ ব্যাক্তি পর্যন্ত শরিক হয়ে কোরবানি করা যায় ও কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় তা আমাদের জানতে হবে।

চরিত্রের সংখ্যার জোড় হোক বা বেজোড় হোক তাতে কোন সমস্যা নেই তবে কোরবানির জন্য শর্ত হলো কারো অংশ যেন এক -সপ্তমাংশের চেয়ে কম না হয়। (মুসলিম, হাদিস :১৩১৮)শরিকেরা মিলে কোরবানি করার সময় অনেকে পশু জবাই এর আগে অংশীদারের নাম জোরে জোরে মুখে উচ্চারণ করে বলতে দেখা যায় অনেকে ভাবে নাম উচ্চারণ করাকে জরুরী মনে করেন।

এমন না করলেও কোরবানি হবে না বলেও অনেকে মনে করেন। তবে আলেমেরা বলেন,' কোরবানির সময় কোরবানি দাদাকে নাম উল্লেখ করা জরুরী নয়।' কেননা তার পক্ষ থেকে পশু কুরবানী করা হচ্ছে সেটি তো পশু কেনার সময় নির্ধারিত হয়ে যায়। অর্থাৎ কোরবানির পশুর ক্ষেত্রে দেখা হবে মালিকা না কাদের পশুতে যার যার মালিকানা আছে তাদের যাদের নামে কোরবানি আদায়ের নিয়ত করবেন তাদের নামে কোরবানি হবে।
পশু জবাই এর সময় কোরবানি দাতাদের নাম উল্লেখ করা সুন্নত আমলের পর্যায়েও পড়ে না কেননা রাসূল (সা:) কোরবানির পশু জবাই করার সময় কার পক্ষ থেকে কোরবানি হচ্ছে বা কারো নাম মুখে উচ্চারণ করে বলেছেন বলে কোন বর্ণনায় পাওয়া যায়নি তবে তিনি কোরবানির পশু জবাই করার সময় তিনি মুখে বিসমিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার বলেছেন।

কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয়

আজকে আপনারা কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় সে সম্পর্কে জানবেন ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত কোরবানি করা এটি ইসলামের মৌলিক ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত প্রত্যেক সামর্থ্যবান পুরুষ নারীর উপর কোরবানি ওয়াজিব আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূলের শর্তহীন অনুগত ত্যাগ ও বিসর্জনের শিক্ষা রয়েছে কুরবানীতে।

আল্লাহতালা সন্তুষ্ট অর্জনের উদ্দেশ্যে কোরবানি করা পশুর মাংস ভাগ করার একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে মহানবী (সাঃ) কোরবানির পশুর গোশত ভাগ করার নিয়ম বলে দিয়েছেন।আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোরবানির গোশত একভাগ নিজের পরিবারকে খাওয়াতেন এক ভাগ গরিব প্রতিবেশীদের দিতেন এবং একভাগ গরিব মিসকিনদের দিতেন।

এছাড়াও ইবন মাসঊদ (রা.) কোরবানির গোশত ৩ ভাগ করে একভাগ নিজেরা খেতেন একভাগ যাকে চাইতেন তাকে খাওয়াতেন এবং একভাগ ফকির মিসকিনদের দিতেন বলে উল্লেখ রয়েছে।কোরবানির মাংস আরটিও গরীবদের মাঝে বিতরণ না করাটা খুবই গর্বিত কাজ।

এটা কৃপণতা প্রকাশ পায় কারণ কোরবানির মাধ্যমে কোরবানি দাতা অহংকার থেকে নিরাপদ থাকেন এবং তার অন্তর পরিশুদ্ধ থাকে।আল্লাহ তাআলা এটাই চান বলেছেন,' তাই মনে রেখো কোরবানির জন্তুর গোশত অথবা রক্ত আল্লাহর কাছে কখনোই পৌঁছায় না। বরং তার কাছে কেবলমাত্র তোমাদের তাকওয়াই পৌঁছায়।' (সুরা হজ:৩৭)

কুরবানীর সঠিক নিয়ম

আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট ও অর্জনের জন্য আমরা কোরবানি করে থাকি কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় সে সম্পর্কে আপনারা হয়তো জেনে গেছেন। এবার আপনারা কুরবানির সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন। কোরবানির পশু সোয়ানের পর যেন কিবলামুখী হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে পশ্চিম দিকে যেহেতু আমাদের কিবলা সেই হিসেবে পশ্চিম দিকে যাতে পশুর মুখ হয় সেদিকে আমরা খেয়াল রাখব।

অর্থাৎ পশুকে বা পাজরের ওপর দক্ষিণ দিকে মাথা দিয়ে কিবলামুখী করে সোয়াতে হবে। এভাবে পশুকে শোয়ানো উত্তম পশুটিকে এমন ভাবে ধরতে বা বেঁধে নিতে হবে। যেন জবাইয়ের সময় সে পা গুলো বারবার ছোড়াছড়ি করতে না পারে। উটের ক্ষেত্রে নাহর করা যায় বিষয়টি হলো দাঁড়ানো অবস্থায়।

বুকের দিকে থেকে ঘাড় পর্যন্ত চলে যাওয়ার প্রধান রক্ত বাহির রগ কেটে দেওয়া হয়। নাহর করলে রক্তক্ষরণ হতে হতে উট নিস্তেজ হয়ে মাটিতে ঢলে পড়ে এবং মৃত্যু হয়।উটকেও শোয়া অবস্থায় জবাই করা যায়।

জবাই করার সময় যাতে পশু কষ্ট না পাই সেজন্য যে চুরিটি ব্যবহার করা হবে তা আগে থেকে শান দিয়ে খুব ধারালো করে নিতে হবে। পশুর গলার ছুরি চালানোর সময় বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার বলতে হবে শুধু বিসমিল্লাহ বললেও চলবে। যে বা যারা কোরবানি পশু জবাই করবেন বা ধরবেন তারা পবিত্র বা অজু অবস্থায় থাকবেন। কাপড় চোপড় শালীনভাবে পরিধান করতে হবে।

অসুখে শোয়াতে কষ্ট হলে বা ব্যাগ পেতে হলে শোয়ানোর পর রেগে গিয়ে পশুর শরীরে কিল ঘুষি লাথি মারা যাবেনা যিনি বা যারা পক্ষ থেকে কোরবানি দেওয়া হচ্ছে তার নিজের হাতে জবাই করাই উত্তম। অবশ্য অংশীদারত্বের মাধ্যমে কোরবানি করলে যেকোনো শরীর ব্যক্তির জবাই করতে পারবেন অভ্যাস না থাকলে অন্য কেউ জবাই করতে পারবে।

চুরি ডান হাতে অথবা উভয় হাতে ধরা ভালো কোনোক্রমে শুধু বা হাত ব্যবহার করে জবাই করা উচিত নয় চুরি চালানোর সময় পশুর গড়ার মূল তিনটি অঙ্গ কেটে দিতে হয়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে খাদ্যনালী দ্বিতীয়টি শ্বাসনালী, তৃতীয়টি দুই পাশে দুইটি রগ। যদি ঠিক মত এই অঙ্গগুলো কেটে দেওয়া যায় তাহলে গরু 10 থেকে 15 মিনিটের মধ্যে নিতে হয়ে পড়বে এভাবেই গরু জবাই করা সুন্নত।
FAQ।কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয়।কোরবানির সঠিক নিয়ম
প্রশ্ন ০২ঃ কোরবানি কয় নামে দেওয়া যায়?
উত্তরঃ কোরবানি ৭ জনের নামে দেওয়া যায়।
প্রশ্নঃ কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয়?
উত্তরঃ কোরবানি মাংস ৭ ভাগে ভাগ করা যায়।
প্রশ্ন০৩ঃ কোরবানি কার উপর ওয়াজিব নয়?
উত্তরঃ 
  • মাসআলা: কোরবানি সম্পূর্ণ হালাল সম্পদ থেকে করতে হবে হারাম টাকা দ্বারা কোরবানি করা সহি নয় এবং এই ক্ষেত্রে অন্য শরীকদের কোরবানি ও সহিহ হবে না। (আহসানুল ফাতাওয়া ৭/৫০৩)
  • মাসআলা: কোরবানির পশু চুরি হয়ে গেলে বা মরে গেলে ধনী ব্যক্তি আরেকটি পশু কোরবানি করতে হবে। গরিব যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয় হলে তার জন্য আরেকটি কোরবানি করা ওয়াজিব নয়। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৯)
  • মাসআলা: দরিদ্র ব্যক্তির যে নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নয় তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব নয় তবে সে কোরবানির নিয়তে পশু খরিদ করলে ওই পশুটি কোরবানি করা তার ওপর ওয়াজিব হয়ে যায়। ( বাদায়েউস সানায়ে ৫/৬২)

শেষ কথা।কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয়।কোরবানির সঠিক নিয়ম

প্রিয় পাঠক আপনারা নিশ্চয়ই আজকের আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে জানতেও বুঝতে পেরেছেন কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয় এবং কোরবানির সঠিক নিয়ম সম্পর্কে।অবশ্যই আপনি যদি কোরবানি দেন তাহলে সঠিক নিয়মে এবং সঠিকভাবে মাংস বিতরণ করতে হবে।কিন্তু বর্তমান সময়ে কোরবানি দেওয়ার নাম করে মানুষ মাংস ফ্রিজ আপ করছে।

মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য অবশ্যই আপনাকে কোরবানি দিয়ে সঠিক নিয়মে মাংস ভাগ করতে হবে।আশা করছি আপনি আজকের আর্টিকেল পড়ে কোরবানি সম্পর্কিত সকল তথ্য জেনে উপকৃত হয়েছেন।আজকের আলোচনা আপনার কাছে ইনফরমেটিভ মনে হলে আপনার বন্ধু এবং আত্মীয়দের মাঝে শেয়ার করুন।তারা সর্বশেষ আপডেট আর্টিকেল পেতে আমাদের সঙ্গে থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিঃ হেল্প বুক ওয়েবসাইটে ; নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url