কোর্টের মাধ্যমে তালাক দেওয়ার নিয়ম ও স্ত্রীকে ডিভোর্স দিবেন যেভাবে
বর্তমানে বাংলাদেশের স্বামী স্ত্রীর ডিভোর্সের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়ে
চলেছে।এজন্য অনেকেই জানতে চেয়েছেন কোর্টের মাধ্যমে তালাক দেওয়ার নিয়ম ও খোলা
তালাকের ইদ্দত কত দিন থাকে।তাই আপনারা যদি স্বামী স্ত্রী ডিভোর্স বা তালাক দিতে
চান?তাহলে আজকের আর্টিকেল পড়ে কোর্টের মাধ্যমে তালাক দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে
বিস্তারিত জেনে নিন।
বিবাহ বন্ধন থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হলে সরকারি ও ইসলামিক কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। যে
সমস্ত নিয়মকানুন প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।তাই আপনারা যদি
বিবাহ বিচ্ছিন্ন করতে অর্থাৎ ডিভোর্স ও তালাক দিতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেল
আপনার জন্য।আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি কোর্টের মাধ্যমে তালাক দেওয়ার নিয়ম ও খোলা
তালাকের ইদ্দত কত দিন থাকে এ সম্পর্কে একটা ধারণা পাবেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কোর্টের মাধ্যমে তালাক দেওয়ার নিয়ম।খোলা তালাকের ইদ্দত
কত দিন থাকে
ডিভোর্স দিতে কত টাকা লাগে
আপনারা কি দিবসটিতে কত টাকা লাগে সেই সম্পর্কে জানতে চান অনেকেই কিন্তু যারা
ডিভোর্স দিতে চাই কিন্তু জানে না কত টাকা খরচ লাগে ডিভোর্স দিতে।বর্তমান সময়ে
ডিভোর্স একটি অতি সাধারণ ব্যাপার হয়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে এবং প্রচুর মানুষ
প্রতিদিন ডিভোর্স ফাইল করছে তার জন্য কিন্তু তারা জানতে চাইছে যে ডিভোর্স দিতে কত
টাকা প্রয়োজন হয়।
সাংসারিক ঝামেলা বা মনের অমিল থাকার প্রচুর মানুষ বর্তমানে
ডিভোর্সে জিতে যায় এবং তারা জানেনা ডিভোর্স দেওয়ার ফলে তাদের কত টাকা লাগতে
পারে।মুসলিমে বিবাহ ও তালাক ২০০৯ এর ২১ বিধি অনুযায়ী তালাক নিবন্ধনের জন্য ৫০০ টাকা
ফি গ্রহণ করতে পারবে রেজিস্টার নকল প্রাপ্তির ফি ৫০ টাকা যাতায়াত বাবদ প্রতি
কিলোমিটার ফি ১০ টাকা ও তল্লাশি ফি ১০ টাকা গ্রহণ করতে পারবেন।
বাংলাদেশের ডিভোর্স দেওয়ার খরচ নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের উপর যেমন :
বিবাহের ধরন: মুসলিম বিবাহের ক্ষেত্রে তালাক খরচ তুলনামূলকভাবে কম অন্যদিকে
হিন্দু বিবাহের ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদের খরচ বেশি হতে পারে।
বিবাহ বিচ্ছেদের ধরন: পারস্পরিক সম্মতিতে বিবাহ বিচ্ছেদে খরচ বিতর্কিত বিবাহ
বিচ্ছেদের চেয়ে কম।
আইনজীবীর ফি: আপনি যদি একজন আইনজীবী সাহায্য নেন তাহলে তার ফ্রি আপনার বিবাহ
বিচ্ছেদের খরচের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হতে পারে।
অন্যান্য খরচ: আদালতের ফি, সাক্ষীর ফি এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ আপনার বিবাহ
বিচ্ছেদের খরচের অংশ হতে পারে।
সাধারণভাবে বাংলাদেশে ডিভোর্স দেওয়ার খরচে ৫০০০ টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকার
মধ্যে হয়ে যায়।
কোর্টের মাধ্যমে তালাক দেওয়ার নিয়ম
আপনারা যদি আইন অনুযায়ী তালাক দিতে চান তাহলে কিন্তু আপনারা কোর্টের মাধ্যমে তালাক দিতে পারেন। বাংলাদেশে বিবাহ একটি পবিত্র হিসেবে গণ্য করা হয় তবে বিভিন্ন কারণে অনেক সময় এই বন্ধন ভাঙ্গার প্রয়োজন পড়ে তার আগে একটি কঠিন এবং জটিল প্রক্রিয়া বিশেষ করে যখন এটি কোর্টের মাধ্যমে সংঘটিত হয়।
বাংলাদেশের বিধি অনুযায়ী তালাক দেওয়ার প্রক্রিয়া ধর্মীয় বিধি পারিবারিক আইন এবং ব্যক্তিগত আইনের মিশ্রনের নির্দেশিত হয়। এই নিবন্ধে আমরা ২০২৪ সালে বাংলাদেশে কোর্টের মাধ্যমে তালাক দেওয়ার নিয়ম ও প্রক্রিয়া গুলো আলোচনা করব। বাংলাদেশের বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আইন ধর্ম অনুসারে ভিন্ন। মুসলিম ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য নিম্নলিখিত আইন প্রযোজ্য।
মুসলিমদের জন্য প্রযোজ্য :
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ : এই অধ্যাদেশ মুসলিম বিবাহ, তালাক, ভরণপোষণ ও অন্যান্য পারিবারিক বিষয়ের দিন নিয়ন্ত্রণ করে।
মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রেশন) আইন ১৯৭৪ : এই আইন মুসলিম বিবাহ ও তালাকের নিবন্ধন সম্পর্কিত বিধি-নিষেধ নির্ধারণ করে।
হিন্দুদের জন্য প্রযোজ্য :
হিন্দু বিবাহ আইন ১৯৫৫: এই আইন হিন্দু বিবাহের বিভিন্ন আসপেক্ট নিয়ন্ত্রণ করে তবে বাংলাদেশের হিন্দু বিবাহ বিচ্ছেদের সুস্পষ্ট আইন বিধান সীমিত।
তালাকের প্রক্রিয়া :
বাংলাদেশ বিবাহ এবং তালাক সম্পর্কিত আইন মূল্য ও ব্যক্তি ও ধর্মীয় অনুশাসনের উপর নির্ভর করে মুসলিম হিন্দু খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্মের জন্য বিভিন্ন আইন এবং প্রক্রিয়া প্রযোজ্য তবে সকল ধর্মের জন্য কিছু সাধারণ নিয়ম রয়েছে যা বিচার বিভাগ অনুসরণ করে।
তালাকের প্রাথমিক ধাপসমূহ :
প্রাথমিক পরামর্শ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ: তালাক নেওয়ার আগে উভয় পক্ষেরই উচিত বৈবাহিক জীবনে সমস্যা সমূহ নিয়ে আলোচনা করা এবং সম্ভব হলে তার সমাধান করা পারিবারিক পরামর্শ বা মেডিটেশন এর মাধ্যমে সমস্যা গুলি সমাধানের চেষ্টা করা উচিত।
আইনি পরামর্শ গ্রহণ: যদি তালাকা অবশ্যম্ভাবী হয় তাহলে উভয়পক্ষের ই উচিত একজন আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করা এবং তালাকের আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেওয়া।
আবেদন প্রস্তুত ও দাখিল: তালাকের জন্য আবেদন প্রস্তুত করা এবং সংশ্লিষ্ট আদালতে দাখিল করা হয় আবেদনে বিবাহ ও তালাকের কারণগুলি উল্লেখ করা আবশ্যক।
তালাকের প্রক্রিয়া: বিবাহ বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া বেশ কঠিন এবং ধাপে ধাপে অনুসরণ করতে হয় নিম্নে এর ধাপগুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
আবেদন: বিবাহ বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু হয় সংশ্লিষ্ট পারিবারিক আদালতে একটি লিখিত আবেদন দাখিল করে এই আবেদনপত্রের বিবাহ তারিখ স্থান কাবিননামা সন্তানের তথ্য তালাকের কারণ ইত্যাদি সম্পর্কিত সকল তথ্য উল্লেখ করতে হয় এর সাথে প্রয়োজনে সমস্ত কাগজপত্র এবং প্রমাণ সংগ্রহ করে জমা দিতে হবে।
নোটিশ: আদালতে আবেদন প্রাপ্তির পর প্রতিপক্ষের একটি নোটিশ পাঠাবে যাতে তাকে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদনের বিষয়ে অবগত করা হবে এবং নির্ধারিত তারিখে আদালতে উপস্থিত হতে বলা হবে।
শুনানি: নির্ধারিত তারিখে আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে যেখানে আবেদনকারী ও প্রতিপক্ষ উভয়েরই চুক্তি ও প্রমাণ আদালতে সামনে উপস্থাপন করার সুযোগ পাবেন। প্রয়োজন বোধে আদালতে সাক্ষীদের জবানবুদ্ধি গ্রহণ করা হতে পারে।
রায়: শেষ পর্যায়ে আদালতে উপস্থাপিত সমস্ত প্রমাণ ও যুক্তিগুলোর আলোকে একটি রায় দেবে এই রায় আদালতের স্থির করবে যে বিবাহ বিচ্ছেদের অনুমতি দেওয়া হবে কিনা। যদি বিবাহ বিচ্ছেদের অনুমতি দেওয়া হয় তাহলে আদালতের ভরণপোষণ সন্তানের দেখভাল সম্পত্তির ভাগাভাগি ইত্যাদি বিষয়ে নির্দেশনা দেবে।
খোলা তালাকের ইদ্দত কত দিন থাকে
তালাক শব্দের অর্থ বিচ্ছিন্ন ত্যাগ করা শরীয়তে ইসলামে আনুষ্ঠানিক বিবাহ বিচ্ছেদকে তালাক বলা হয় ইসলামী তালাক দেওয়া বৈধ হলেও অনুৎসাহিত করা হয়েছে যৌক্তিক কারণে তালাক দেওয়া হলে এর কিছু নিয়ম কানুন আছে সেগুলো অবশ্যই মানতে হবে তালাকের পর স্ত্রীকে ইদ্দত পালন করতে হয়।
ইদ্দত শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো গণনা করা পরিভাষায় নারীদের ওই সময় পর্যন্ত অন্যত্র বিয়ে করা থেকে বিরত থাকাতে থাকাকে ইদ্দত বলে যখন তার আগের বিয়ের প্রভাব প্রকাশ যেমন অন্তঃসত্ত্বা ইত্যাদি সম্ভাবনা শেষ হয়েছে বলে শরীয়ত নির্ধারণ করেছে। স্বামী যদি মারা যায় বা তালাক দেয় কিংবা যে কোনভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।
তাহলে কিছুদিনের জন্য নিজেকে ঘরে আবদ্ধ করে রাখা। শরীয়তে নির্দেশে এই সময়ের মধ্যে ঘর থেকে জরুরত ছাড়া বের হওয়া যাবে না। অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া যাবে না ইদ্দত পালন করা মহিলাদের জন্য আবশ্যক। তালাকের মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তিন হায়েজ( পিরিয়ড) পরিমাণ সময় হল ইদ্দত।
আল্লাহ তা'আলা বলেন, আর তালাক প্রাপ্ত নারী নিজেকে অপেক্ষায় রাখবে তিন হায়েজ পর্যন্ত। (সূরা বাকারা 228) আর যদি স্বামী মারা যায় তাহলে স্ত্রীকে চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করতে হয়। এ বিষয়ে পবিত্র কুরআনে এসেছে, তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী দেখে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তাদের স্ত্রীরা চার মাস দশ দিন প্রতীক্ষায় থাকবে। (সূরা বাকারা ২৩৪)
স্বামীকে ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম
- মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন 1939 এর অধীনে স্ত্রী নয়টি কারণে তাই যেকোনো এক বা একাধিক ভিত্তিতে আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাকের জন্য আবেদন করতে পারবে
- স্বামী চার বছরের বেশি সময় নিরুদ্দেশ থাকলে
- দুই বছর ধরে স্বামী তার স্ত্রীর ভরণপোষণ দিতে ব্যর্থ হলে।
- সাত বছর বা তার বেশি সময় স্বামী কারাদণ্ডের দন্ডিত হলে।
- কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া তিন বছর ধরে স্বামী তার দাম্পত্য দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে।
- ১৯৬১ সালে মুসলিম পারিবারিক আইনের বিধান লঙ্ঘন করে স্ত্রীর অনুমতি ব্যতীত বিয়ে করলে।
- স্বামী দুই বছর ধরে পাগল থাকলে অথবা মারাত্মক যৌন ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে।
- বিয়ের সময় পুরুষত্বহীন থাকলে এবং তা মামলা করার সময় পর্যন্ত স্বামীর পুরুষত্বহীনতা বজায় থাকলে।
নাবালিকা অবস্থায় বিয়ে হয়েও থাকলে অথবা সাবালক লাভের পর অর্থাৎ ১৮ বছর পূর্ণ
হওয়ার পর স্ত্রী বিয়ে অস্বীকার করলে।স্বামী সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপিত হয়ে
থাকলে এইরকম মামলা করা যাবে না
স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম
একজন স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক পুরুষই জানতে চাই যে কি নিয়ম মানতে
হবে স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আজকে আপনাদেরকে জানাবো। আদালতের
মাধ্যমে স্বামী যেসব কারণে স্ত্রীকে তালাক দিতে পারেন।
- তালাক-ই তৌফিজের মাধ্যমে
- খোলা তালাকের মাধ্যমে তালাক দিতে হবে।
শুধু মুখে তিন তালা উচ্চারণ করলে তালাক কার্যকর হয় না আবার লিখিতভাবে তালাক
দিলেও সঙ্গে সঙ্গে তা কার্যকর হবে না আইনের বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করার পর তালাক
কার্যকর হবে তালাক আইন অনুযায়ী তালাক হবে।
স্বামী কর্তৃক তালাক : তালাক দেওয়ার অধিকার বা ক্ষমতা স্বামীর সবচেয়ে বেশি কারণ
কোন কারণ ছাড়া স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দিতে পারে।
স্ত্রী কর্তৃক তালাক: তালাক দেওয়ার অধিকার বা ক্ষমতা স্ত্রীর কম আইনে উল্লেখিত
কার্বন ব্যতীত স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক দিতে পারবে না তবে কাবিন নামের ১৮
নাম্বার কলমে স্বামীর মাধ্যমে স্ত্রীকে বিয়ে বিচ্ছেদের ক্ষমতা দেওয়া থাকলে
স্ত্রী তালাক দিতে পারবেন।
পারস্পরিক সম্মতিতে তালাক: খুলা - স্ত্রী তার স্বামীকে দিয়ে কোন কিছুর বিনিময়ে
তালাক দেওয়ার জন্য রাজি করাবেন।
মুবারত: স্বামী স্ত্রী উভয় পারস্পরিক সম্মতি দিয়ে তালাতে সিদ্ধান্ত নেওয়া।
আদালতের মাধ্যমে বিচ্ছেদ : আদালতে বিভাগের বিচ্ছেদের আবেদন করে তালাক নেওয়া
স্বামী তার স্ত্রীকে বা স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক দিবেন আদালতের নিয়ম অনুযায়ী।
খোলা তালাক দেওয়ার নিয়ম
খোদাত বলা হয় স্ত্রী থেকে স্বামী বিনিময় গ্রহণ করবে তাকে তালাক দেওয়াকে
খোলাতালাকের প্রতি ইসলাম শরীয়ত কাউকে উদ্বুদ্ধ করে না। নির্দিষ্ট সময় বিশেষ
প্রয়োজনে শর্তসাপেক্ষে তা বৌদ্ধ শর্ত পালন না গেলে তালাকের বিনিময় গ্রহণ করা
অবৈধ খোলা তারাকের বিধান হল যদি স্বামী অন্যায় বা দোষের কারণে স্ত্রী তালাকের
আবেদন করে এই অবস্থায় তাকে তালাক দিতে স্বামী বিনিময়ে চাইতে পারবে না বরং তা
তার জন্য হারাম হবে।
আর যদি স্ত্রী সীমালঙ্ঘন বা অন্যায়ের কারনে তালাক দিতে হয়
সেক্ষেত্রে স্বামী তার থেকে তালাকের বিনিময় গ্রহণ করতে পারবে। উভয়ের
সম্মতিক্রমে যে পরিমাণ বিনিমায়ের ওপর একমত হবে তাই নেওয়া বৈধ। তবে এক্ষেত্রে
বিনিময়টি বিয়েতে ধার্যকৃত মহরের বেশি না হয় উত্তম।
মহান আল্লাহ এই বিষয়ে কোরআনে ইরশাদ করেন, হে মুমিনরা! তোমাদের জন্য হালাল নয় যে
তোমরা জোর করে নারীদের উত্তরাধিকার হবে আর তোমরা তাদের আবদ্ধ করে রেখো না তাদের
যা দিয়েছো তা থেকে তোমরা কিছুই নিয়ে নেওয়ার জন্য তবে যদি তারা প্রকাশ্য
অশ্লীলতার লিপ্ত হয়। (সুরা নিসা: আয়াত: ১৯)
মহান আল্লাহ অন্যত্র এরশাদ করেন আর তোমাদের জন্য হালাল নয় যে তোমরা তাদের যা
দিয়েছো তা থেকে কিছু নিয়ে নেবে তবে উভয় যদি আশঙ্কা করে যে আল্লাহ সীমারেখায়
তারা অবস্থান করতে পারবে না সুতরাং তোমরা যদি আশঙ্কা করো যে তারা আল্লাহর
সীমারেখায় অবস্থান করতে পারবে না তাহলে স্ত্রীর যা দিয়ে নিজেকে মুক্ত করে নিবে
তাতে কোন সমস্যা নেই। ( সুরা বাকারা: আয়াত:২২৯)
মুখে তালাক দেওয়ার নিয়ম
তালাক শব্দের অভিধানিক অর্থ বন্ধন মুক্ত করা শরীয়তে পরিবেশে স্ত্রী বিবাহ বন্ধন
থেকে মুক্ত করা। তালাকের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়
আজীবন তারা একে অপরের জন্য অপরিচিত হয়ে যান। ইসলামে তালাকের বিধান রাখা হলেও
দাম্পত্য বিচ্ছেদের এই প্রক্রিয়া অবলম্বনের প্রতি সবসময় নিরুৎসাহিত করা হয়েছে
এমনই হাদীসে তালাকের বিষয়টিকে, "সর্বনিকৃষ্ট হালাল" বলা হয়েছে।
তবে পৃথিবীর বাস্তবতাও পারপাসিক অবস্থানের কারণে যদি কোন দাম্পতির জন্য একসঙ্গে
থাকা সম্ভব না হয় ইসলামে কয়েকটি পতক্ষে গ্রহণের কথা বলা হয়েছে সেই পদক্ষেপগুলো
গ্রহণ করে ফায়সালার পথ বেছে নিতে হবে।
কোরআনে বর্ণিত দাম্পত্য সমস্যা সমাধানের পদ্ধতি গুলো অবলম্বনের পরও যদি পরিস্থিতি
স্বাভাবিক না হয় কোন সমাধান না হয় এবং সর্বশেষ্ঠা ব্যর্থ হয় তাহলে সব
পরিস্থিতির পর ইসলামী শরীয়ত স্বামীকে তালাক দেওয়ার ইচ্ছাধিকার দিয়েছে। তবে
ইসলামের দৃষ্টিতে তালাক দেওয়ার অত্যন্ত অপছন্দনীয় ও ঘৃণিত কাজ হাদিস শরীফে
বলেছে আল্লাহর কাছে বৈধ কাজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঘৃণিত কাজ হল তালাক। (আবু দাউদ,
হাদিস: ২১৭৮)
এরপরও তালাক দেওয়া ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা না থাকলে এই ইসলাম শরীয়ত সমর্থিত
পদ্ধতি অনুসারে তালাক দিতে হবে।কোরআন ও হাদিসে বর্ণনা অনুযায়ী তালাক দেওয়ার সর্বোত্তম ও সুন্দর পদ্ধতি হল
স্ত্রী যখন হাইয়েস্ট থেকে পবিত্র হয় তখন স্বামী তার সঙ্গে সহবাস না করে
সুস্পষ্ট শব্দে এক তালাক দেবে।
যেমন আমি তোমাকে তালাক দিলাম এরপর স্বামীর যদি
স্ত্রীকে ইদ্দত চলাকালীন ফিরিয়ে নিতে চাই তাহলে তা পারবে। পুনরায় সম্পর্ক
কায়েম করতে না চাইলে স্ত্রীর ইজ্জত শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক
বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং স্ত্রী স্বামীর কাছে থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হয়ে যাবে তখন
স্ত্রী ইচ্ছা করলে অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারবে।
লেখকের মন্তব্য।কোর্টের মাধ্যমে তালাক দেওয়ার নিয়ম।খোলা তালাকের ইদ্দত কত দিন থাকে
প্রিয় পাঠক ও বন্ধুরা আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল আলোচনার বিষয় থেকে আপনাদের
সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি কোর্টের মাধ্যমে তালাক দেওয়ার নিয়ম ও খোলা তালাকের ইদ্দত কত দিন থাকে এ বিষয় সম্পর্কে।আপনারা নিশ্চয়ই আজকের আর্টিকেল পড়ে স্বামীকে
ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম, তালাকে নোটিশ পাঠানোর নিয়ম খোলা, তালাক দেওয়ার নিয়ম
মুখে তালাক দেওয়ার নিয়ম এবং ডিভোর্স কত টাকা লডির্ভোস দেওয়ার নিয়ম।
আশা করছি আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনি যে ধারণাটি পেয়েছেন সে অনুযায়ী কাজ করলে
আপনি খুব সহজেই ডিভোর্স দিতে পারবেন।আমাদের আজকের আর্টিকেল পড়ে ভালো লেগে থাকলে
আপনার বন্ধু আত্মীয়দের মাঝে শেয়ার করবেন।সবাইকে ইসলামী ও সরকারি নিয়ম অনুযায়ী
ডিভোর্স প্রদান করার আহবান জানাবেন।
মিঃ হেল্প বুক ওয়েবসাইটে ; নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url